Ticker news is disabled.

ওয়াকার্স পার্টির ৫০ বছরপূর্তি সমাপণী সমাবেশে রাশেদ খান মেনন বিদেশিদের নির্দেশে নয়, দেশের মানুষ নিজেরাই সুষ্ঠু নির্বাচন করবে

0

“বিদেশিদের নির্দেশে নয়, বাংলাদেশের মানুষ নিজেরাই সুষ্ঠু নির্বাচন করবে।” বললেন বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন এমপি। পার্টির ৫০ বছরপূর্তিতে বছরব্যাপি কর্মসূচীর সমাপণী সমাবেশে তিনি এ কথা বলেন।
আজ (১৭ মে) সকাল ১১ টায় রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনিস্টিটিউশন মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত সমাবেশে তিনি আরো বলেন, “নির্বাচন এলেই দেশি-বিদেশি নানা ষড়যন্ত্র শুরু হয়। আগামী নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দেশের মানুষ উদ্বিঘœ। বিদেশি বন্ধুরা অবাধ নিরপেক্ষ নির্বাচন চায়, অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন চায়। তারা নানাভাবে হুমকি দিচ্ছে। কিন্তু আমরা স্পষ্ট করে বলতে চাই, আমরাও অংশগ্রহণমূলক এবং অবাধ-সুষ্ঠু নির্বাচন চাই। তবে নির্বাচন বানচালের কোনো ষড়যন্ত্র হলে তা আমরা প্রতিহত করব। তাছাড়া বাংলাদেশের নির্বাচন বিদেশিদের নির্দেশে হবে না, নির্বাচনকে উৎসব হিসেবে নেওয়া দেশের মানুষ নিজেরাই সুষ্ঠু নির্বাচন করবে।”
বর্ষীয়ান বামপন্থী এই নেতা বলেন, “ নির্বাচনের ইতিহাস আমাদের জানা আছে, তার বিরুদ্ধে ওয়ার্কার্স পার্টির লড়াইয়ের ইতিহাসও আছে। সামরিক শাসনামলে সেনাবাহিনীকে ব্যবহার করে ‘হ্যাঁ-না’ ভোট হয়েছে। দুর্ভাগ্য সে সময় অনেক কমিউনিস্ট বন্ধুরা হ্যাঁ বললেও একমাত্র ওয়ার্কার্স পার্টি’ই ‘না’ বলেছিল। ’৮৬-তে মিডিয়া ক্যু নির্বাচন হলে ওয়ার্কার্স পার্টি সেই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে নাই। নব্বই পরবর্তী সময়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের লড়াইয়েও ওয়ার্কার্স পার্টি ছিল। কিন্তু ২০০৬ সালে তত্ত্ববধায়ক সরকারের চেহারা পাল্টে দেওয়া হলো। বিচারপতির বয়স বাড়ানো হলো। এমএ আজিজ কমিশনের সময় ১ কোটির বেশি ভুয়া ভোটার তৈরি করা হয়েছিল। দেশের মানুষ এসব ভুলে যায় নি। ওয়ার্কার্স পার্টি সেই সময় স্পষ্ট উচ্চারণ করে বলেছিল ‘বিএনপি-জামাত জোট সরকার আর না’।”
মেনন বলেন, “ওয়ার্কার্স পার্টি যেমন নির্বাচনী ব্যবস্থা পাল্টানোর জন্য লড়াই করেছে, নির্বাচনী ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে লড়াই করেছে, তেমনি আগামী দিনেও নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্র হলে প্রতিরোধ লড়াই করবে। আমরা অবাধ-নিরপেক্ষ অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন চাই, তবে অতীতের মতো অগ্নিসন্ত্রাস, জঙ্গিবাদী সন্ত্রাস ও তা-বের মাধ্যমে নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্র করলে ওয়ার্কার্স পার্টি লড়াই করেই তা প্রতিহত করবে।”  উন্নয়ন-ও বৈষম্য সম্পর্কে তিনি বলেন,“ উন্নয়ন হয়েছে সন্দেহ নেই। কিন্তু বৈষম্য মানুষের পিছু ছাড়ছে না। উন্নয়নের ফসল যাচ্ছে মুষ্টিমেয় কিছু আমলা ধনীক শ্রেণীর মানুষের হাতে। দেশের টাকা বিদেশে পাচার করে তারা সম্পদের পাহাড় গড়ছে, আর আমাদের দেশের গরিব-মধ্যবিত্তরা মানবেতর জীবনযাপন করছে। এই শ্রেণি ব্যৈষম্য দূর করতে সমাজতন্ত্রের বিকল্প নেই। এর থেকে কেবল সমাজতন্ত্রই মুক্তি দিতে পারে। তার জন্য শ্রেণিসংগ্রামকে জোরদার করতে হবে।”
বিদেশিদের উদ্যেশ্যে মেনন বলেন,“ ওয়ার্কার্স পার্টি যখন অপারেশন ক্লিনহার্টের বিরুদ্ধে লড়াই করেছে, তখন কোথায় ছিল বিদেশি বন্ধুরা। কথা বলেন নি। বরং সেনা নিয়ন্ত্রিত নতুন গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার প্রেসক্রিপশন দিয়েছিল। প্রেসক্রিপশন দিয়েছিল মাইনাস-টু-ফর্মূলা, কিংস পার্টি গঠনের। তাই সামগ্রীক ব্যবস্থার পরিবর্তন না হলে মানুষের মুক্তি মিলবে না। সেই মুক্তির জন্য সমাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠার লড়াইকে জোরদার করুন।”
অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন পার্টির সাধারণ সম্পাদক কমরেড ফজলে হোসেন বাদশা, পলিটব্যুরোর সদস্য কমরেড ড.সুশান্ত দাস, কমরেড মাহমুদুল হাসান মানিক, কমরেড নুর আহমদ বকুল, কমরেড লুৎফুল্লাহ মুস্তফা। মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন পলিটব্যুরোর নেতৃবৃন্দ। সঞ্চালনা করেন পলিটব্যুরোর সদস্য কমরেড কামরূল আহসান। অনুষ্ঠানের শুরুতে গণসঙ্গীত পরিবেশন করেন গণশিল্পী সংস্থা ও গণ সাংস্কৃতিক মৈত্রী’র শিল্পীরা।

Share.