করোনায় অরক্ষিত গ্রামের মানুষকে সুরক্ষা দিতে হবে

0

“নারায়গঞ্জের কর্ণগোপে সেজান জুস কারখানায় ভয়াবহ  অগ্নিকান্ডে ৫২জন শ্রমিকের মৃত্যু, অর্ধশতাধিক  শ্রমিক  আহত ও অজানা  সংখ্যক শ্রমিক নিখোঁজের ঘটনায়  গভীর উদ্বেগ, নিন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছে ওয়ার্কার্স পার্টি। পার্টি, অগ্নিকান্ডে হতাহতদের প্রতি গভীর শোক ও সমবেদনা জানিয়েছে।” আজ কমরেড রাশেদ খান মেননের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত পলিটব্যুরোর ভার্চুয়াল সভায় এই প্রস্তাব গ্রহন করা হয়। পার্টির সাধারণ সম্পাদক কমরেড ফজলে হোসেন বাদশার উপস্থাপনায় ‘সজিব গ্রæপের সেজান জুস কারখানায়’ ভয়াবহ অগ্নিকান্ডে শ্রমিকের মৃত্যু, করোনা অতিমারি পরিস্থিতি ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তর কর্তৃক প্রদত্ত বিজ্ঞাপন বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনায় পলিটব্যুরোর সদস্যগণ প্রস্তাব গ্রহণ করেন। সভার প্রস্তাবে বলা হয়, অব¯া’ দৃষ্টে এটা প্রতিয়মান যে এটি একটি কাঠামো গত হত্যাকান্ড। ‘নিরাপদ কর্ম পরিবেশ’ শ্রমিকের মৌলিক অধিকার। নিরাপদ কর্ম পরিবেশের অভাবে দেশে প্রায়শ দুর্ঘটনায় নিপতিত হয়ে শ্রমিকের প্রাণ সংহার হচ্ছে। শোভন ও নিরাপদ কর্ম পরিবেশ নিশ্চিত করার দায়িত্ব প্রথমত মালিক কর্তৃপক্ষের এবং তা নিশ্চিত করার তদারকির দায়িত্ব সরকারি পরিদর্শন কর্তৃপক্ষের। এক্ষেত্রে উভয়ই চরম গাফিলতি দেখিয়েছে যা ক্ষমার অযোগ্য ও চরম অপরাধ। সভার প্রস্তাবে সেজান জুস কারখানার শ্রমিক হত্যাকান্ডে দায়ি সকলকে বিচারের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমুলক শাস্তি প্রদানের দাবি জানানো হয়। সভায় নিখোঁজ শ্রমিকদের খুঁজে বেরকরা, কারখানায় কর্মরত শ্রমিকের প্রকৃত সংখ্যা প্রকাশে ‘কল-কারখানা পরিদর্শন কর্তৃপক্ষের’ সক্রিয় উদ্যোগের আহবান জানানো হয়। সভায় নিহত-আহত শ্রমিকদের পরিবারকে আইএলও কনভেনশন-১২১ অনুযায়ী আজীবন আয়ের সমান ক্ষতি পুরণ প্রদান, আহত শ্রমিকদের সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করার আহবান জানানো হয়।
সভার অপর প্রস্তাবে, দেশে করোনা নতুন জাতের সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়া ও মৃত্যুর ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে বলা হয় সংক্রমণের বিস্তৃতি গ্রাম পর্যায়ে ছড়িয়েছে। গ্রামের মানুষ এখন অরক্ষিত। তাদের সুরক্ষা দিতে সার্বিক ও সম্মিলিত উদ্যোগ নিতে হবে। করোনা রোগী বেড়ে যাওয়ায় জেলার হাসপাতাল গুলোর বেহাল দশা তৈরী হয়েছে। সভায় পার্টি উদ্যোগে গড়ে উঠা ‘সেচ্ছাসেবক ব্রিগেড’ সদস্যদের বাড়ী বাড়ী গিয়ে মানুষকে সচেতনকরা এবং করোনা উপসর্গ বহন করা রোগীদের চিহ্নিত করে উপজেলা হাসপালের চিকিৎসকদের অবগত করে তাদের রোগীর প্রাথমিক চিকিৎসা দিতে সহায়তা করা এবং উপজেলা হাসপাতাল গুলোকে কভিড চিকিৎসায় সক্রিয় করার উদ্যোগ  নেয়ার আহবান জানানো হয়। সভার আরেক প্রস্তাবে, সম্প্রতি স্বাস্থ্য ও পরিবার মন্ত্রনালয়ের স্বাস্থ্য অধিদপ্তর কর্তৃক ‘আকুল আবেদন’ শিরোনামে বিভিন্ন পত্রিকায় প্রদত্ত বিজ্ঞাপনকে অসংতিপুর্ণ ও স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয়ের কর্তা ব্যক্তিদের অযোগ্যতা আড়াল করা, ভুল তথ্য উপস্থাপন এবং জনগণকে বেকুব মনে করার ইঙ্গিত পুর্ণ ও অশোভন আখ্যায়িত করে বলা হয়, কথিত বিজ্ঞাপনে করোনা টিকার মূল্য প্রতি ডোজ তিন হাজার টাকা উল্লেখ করা হয়েছে যা অসত্য, মাস্ক ক্রয় বিষয়েও ভুল তথ্য পরিবেশন করা হয়েছে। অন্যদিকে করোনা রোগী পিছু দ’ুলক্ষ টাকা ব্যয়ের কাল্পনিক হিসাব উপস্থাপন করা হয়েছে যা মিথ্যের বেসাতি ছাড়া কিছু নয়। কথিত বিজ্ঞপনটি স্বাস্থ্য খাতের দুরবস্থা, অব্যবস্থাপনা, দুর্নীতি আড়াল করার অপচেষ্টা মাত্র। সভায় বলা হয়, টিকার প্রকৃত মুল্য বিভিন্ন মাধ্যমে জনগণ আগেই জেনেছে। তাই টিকা মূল্যের এই অসংতি প্রকাশ কার স্বার্থে তা সরকারের খুঁজে দেখা উচিত। সভার প্রস্তাবে বলা হয়, বিজ্ঞাপনটি প্রকারন্তে স্বাস্থ্য খাতের দুরবস্থা, অনিয়ম নিয়ে ব্যক্তি ও বিরোধী দলের কথা বলা বন্ধ করার অপঃপ্রয়াশ মাত্র।
আলোচনায় অংশ নেন কমরেড সুশান্ত দাস, কমরেড মাহমুদুল হাসান মানিক, কমরেড নুর আহমেদ বকুল, কমরেড কামরূল আহসান, কমরেড এনামুল হক এমরান, কমরেড আমিনুল ইসলাম গোলাপ, কমরেড হাজী বশিরুল আলম, কমরেড নজরুল ইসলাম হাক্কানী প্রমুখ।

Share.