Ticker news is disabled.

ফেসবুক ও ইউটিউব ও ওয়াজমাহফিল সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষ ছড়ানো তারই পরিণতি শারদীয় দুর্গোৎসবে পুজাম-প-মন্দির, হিন্দুদের বাড়ীঘরে হামলা—রাশেদ খান মেনন

0

বিএনপি-জামাতের মৌলবাদী সাম্প্রদায়িক দুঃশাসনের বিরুদ্ধে দেশকে অসাম্প্রদায়িক গণতান্ত্রিক ধারায় ফিরিয়ে আনতে চৌদ্দদল গঠিত হয়েছিল। চৌদ্দ দলের সেই সংগ্রামে বায়তুল মোকাররমে জড়ো হওয়া জামাতের ছোড়া গুলিতে শহীদ হয়েছিল যুব মৈত্রী কর্মী রাসেল খান। কিন্তু আজ শহীদ রাসেলকে যেমন বিস্মৃতিতে ঠেলে দেয়া হয়ে হচ্ছে। তেমনি চৌদ্দদলের অসাম্প্রদায়িক রাজনৈতিক লড়াইও বিস্মৃত প্রায়। আর এ কারণেই আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ঢাকার সাবেক মেয়র ধর্মনিরপেক্ষতার মূলনীতিতে ‘ধর্মহীনতা’ বলে উল্লেখ করার দুঃসাহস দেখান। চরফ্যাশনের আওয়ামী লীগ দলীয় ইউপি চেয়ারম্যান আফগান তালেবানদের অনুসারে নিজ এলাকায় সেলুনগুলোকে ‘সুন্নতি কার্টি’ ছাড়া চুল কাটলে জরিমানা করা হবে বলে নির্দেশ প্রদান করেন। এর আগে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের একজন উর্ধতন কর্মকর্তাও টাকনুর উপর পায়জামা প্যান্ট পরার নির্দেশ দিয়েছিল। কুমিল্লার পুজাম-পে কোরান রাখার অভিযোগে ধৃত ব্যক্তিকে ‘পাগল’ সাব্যস্ত করতে ব্যস্ত কর্তৃপক্ষ। এগুলো আসলে টেষ্ট কেস। এর মধ্য দিয়ে হেফাজতসহ ধর্মবাদীদের ‘তালেবানী’ শাসন প্রচেষ্টার পরীক্ষা করে দেখা হচ্ছে। আর এসবই করা হচ্ছে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার ধারকদের ছদ্মবরণে। এ অবস্থা চলতে থাকলে বাংলাদেশ কখন একটি ধর্মবাদী রাষ্ট্রে পরিণত হবে তা আমরা টেরও পাবনা। সাম্প্রদায়িক মৌলবাদী অপশক্তি সেই অপেক্ষাতেই আছে। আর সে কারণেই এখনই প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। এবং এগিয়ে আসাতে হবে যুবশক্তিকে।
আজ ২৮ অক্টোবর বাংলাদেশ যুব মৈত্রীর আয়োজিত ২০০৬ সালে চৌদ্দদলের আন্দোলনে জামাতের গুলিতে শহীদ রাসেল খান স্মরণে আয়োজিত আলোচনা সভা উদ্বোধন করতে গিয়ে বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি জননেতা কমরেড রাশেদ খান মেনন এমপি।
মেনন বলেন, ‘ফেসবুক ও ইউটিউব ও ওয়াজমাহফিল সমূহে যে সকল সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষ ছড়ানো হচ্ছে তারই পরিণতি শারদীয় দুর্গোৎসবে পুজাম-প-মন্দিরে হামলাসহ হিন্দুদের বাড়ীঘর ব্যবসা প্রতিষ্ঠান লুট,অগ্নিসংযোগ, দৈহিক আক্রমণ ও জীবনহানির ঘটনা। দুর্ভাগ্যজনক যে দেশের যুব সমাজের একাংশ এ সকল ঘটনায় জড়িত। যুব মৈত্রীকে তাদের আন্দোলনের কর্মসূচিতে যুব মানসকে সাম্প্রদায়িকতা- মৌলবাদ-জঙ্গিবাদ বিরোধী চেতনায় জাগ্রত করতে হবে।
আজ বিকেল ৪টায় ৩০ তোপখানা রোড প্রাঙ্গনে যুব মৈত্রীর শহীদ রাসেল আহমেদ খান স্মরণের আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন যুব মৈত্রীর সভাপতি সাব্বাহ আলী খান কলিন্স। বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন ওয়ার্কার্স পার্টির পলিটব্যুরো সদস্য সাবেক ছাত্র ও যুব নেতা নুর আহমদ বকুল।
নুর আহমদ বকুল বলেন, শহীদ রাসেলের জীবনদান সাধারণ একটি মৃত্যু নয়। শহীদ রাসেলের মৃত্যুর সাথে জড়িয়ে রয়েছে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ, গণতন্ত্রের অধিকার এবং বৈষম্যহীন বাংলাদেশের স্বপ্ন। সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নের লড়াইয়ে সাম্প্রদায়িক জামাত-বিএনপি খুনীদের হাতে তিনি নিহত হন। শহীদ রাসেলের স্বপ্ন ও আকাক্সক্ষা বাস্তবায়নে যুব মৈত্রী লড়াই চালিয়ে যাবে।
সঞ্চালনা করেন সংগঠনের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মুতাসিম বিল্লাহ সানী। আরও বক্তব্য রাখেন কিশোর রায়, তৌহিদুর রহমান, সাদাকাত হোসেন খান বাবুল, তাপস দাস, কাজী মাহমুদুল হক সেনা, কায়সার আলম, জামিরুল ইসলাম ডালিম, মিজানুর রহমান। সংহতি বক্তব্য রাখেন ছাত্র মৈত্রীর সাধারণ সম্পাদক অতুলন দাস আলো প্রমুখ।

Share.