বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির পলিটব্যুরো এক বিবৃতিতে জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল কর্তৃক সংশোধন অধ্যাদেশ ২০২৫ নামে সরকার যে গেজেট প্রকাশ করেছে তার বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়ে নিম্ললিখিত বিবৃতি প্রদান করে-
নেতৃবৃন্দ প্রশ্ন তুলেন বলেন, একটি অনির্বাচিত অন্তবর্তী সরকারের কোন নৈতিক অধিকারই নেই এরূপ একটি সংশোধনীতে হাত দেওয়া। যে সরকারটি মুক্তিযুদ্ধ বিরোধী শক্তি দ্বারা প্রভাবিত ও তাদের লক্ষ্য মুক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়া। প্রণীত অধ্যাদেশে ধারা (২) নং বঙ্গবন্ধুর নাম মুছে দিয়ে ‘মুক্তিযুদ্ধের চেতনায়’ শব্দ বাদ দিয়ে যা প্রতিস্থাপন করার চেষ্টা হয়েছে তা পরিপূর্ণ ভাবেই মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসের রাজনৈতিক নেতৃত্বকে ও মুক্তিযুদ্ধের দর্শনকে অস্বীকার করা হয়েছে। এটা পরিকল্পিত চাতুরিপনা। অধ্যাদেশের ১৫ নং ধারা ‘সহযোগি মুক্তিযোদ্ধা’ হিসেবে (ক,খ,গ,ঘ,ঙ) বিভিন্ন উপধারা যে ভাবে ব্যাখ্যা দেওয়া হচ্ছে, তাতে মুক্তিযুদ্ধের রাজনৈতিক আদর্শে সংগঠিত শক্তিগুলোকে সম্মূখযোদ্ধা বনাম সহযোগিযোদ্ধা বানিয়ে অন্ত্যন্ত সুক্ষ বিভাজন তৈরী করা হবে, শুধু তাই নয় ‘সহযোগী মুক্তিযোদ্ধার মোড়কে জাতীয় রাজনৈতিক সংগ্রামের সকল নেতৃত্বকে অস্বীকার করার আগামী রাস্তা পরিস্কার হবে। এটি একটি ষড়যন্ত্র। ওয়ার্কার্স পার্টি পরিস্কার মনে করে পাকিস্তানী উপনিবেশিক হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে এদেশের মানুষ দীর্ঘ ২৫ বছর গণসংগ্রামের মধ্যদিয়ে ‘৭১ এ একটি গণযুদ্ধে অংশ নিয়েছিল ৩০ লক্ষ শহীদ, ২ লক্ষ মা-বোনের ইজ্জ্বত কোটি কোটি মানুষের ব্যক্তি অর্থ সম্পদ ত্যাগ, কোটি কোটি শরনার্থী বিদেশে অবস্থান, ক্ষুধা, দারিদ্রে, অসুখে মুত্যু। গ্রেফতার হয়ে বন্দী শিবিরে থাকা, সবই ছিল মুক্তিযুদ্ধের সংগ্রাম। মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে থাকাটাই ছিল মুক্তিযোদ্ধার পরিচয়।
ঐ পরিচয় মুছে দিতে বিভাজনের কৌশল নিয়ে মুক্তিযুদ্ধ বিরোধী শক্তি যে রাজনৈতিক লাভ নিতে চাচ্ছে তা এ দেশের মানুষ মেনে নেবে না। এদেশে মুক্তিযুদ্ধ মুক্তিযোদ্ধা যেমন স্বীকৃত বিধায় তেমনি আলবদর, রাজাকার, আল-সামসও স্বীকৃত বিষয়। মুক্তিযুদ্ধের চেতনার পক্ষের সকল রাজনৈতিক, সামাজিক শক্তির সংগঠিত হওয়ার সময়ই এখনি।