Ticker news is disabled.

“পাট পণ্যের চাহিদা পূরণ ও রপ্তানির সুযোগ হাত ছাড়া হলে, তা হবে কর্মসংস্থান, শিল্প, অর্থনীতি ও জাতির জন্য আত্মঘাতি” -পাট-সুতা ও বস্ত্রকল শ্রমিক কর্মচারী সংগ্রাম পরিষদ

0

পাট-সুতা ও বস্ত্রকল শ্রমিক কর্মচারী সংগ্রাম পরিষদের আহŸায়ক সহিদুল্লাহ চৌধুরী দেশ ও বিশ্বব্যাপী পাটের চাহিদা পূরণে, রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকলগুলো আধুনিকায়ন করে চালুর আহŸান জানিয়ে বলেছেন, চাহিদা পূরণ ও রপ্তানির সুযোগ হাত ছাড়া হলে, তা হবে কর্মসংস্থান, শিল্প, অর্থনীতি ও জাতির জন্য আত্মঘাতি।
তিনি বন্ধ পাটকল শ্রমিকদের দুর্দশা তুলে ধরে, এখনও মিল চালু না করা ও পাওন পরিশোধ না করায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
আজ ৪ জানুয়ারি ২০২১, সকাল ১১টা, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি মিলনায়তনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন পাট-সুতা ও বস্ত্রকল শ্রমিক কর্মচারী সংগ্রাম পরিষদের আহŸায়ক প্রবীণ শ্রমিক নেতা সহিদুল্লাহ চৌধুরী। লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সংগ্রাম পরিষদের যুগ্ম আহŸায়ক কামরুল আহসান। এ সময় যুগ্ম আহŸায়ক মছিউদ্দৌলা, আসলাম খান, আবুল কালাম আজাদ, মোঃ: আনোয়ার, কিশোর রায়সহ নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
লিখিত বক্তব্যে বলা হয় বিশ্বব্যাপী পাটজাত পণ্যের বিপুল চাহিদার সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়েছে। বাংলাদেশ এবং ভারত পাট ও পাটপণ্য উৎপাদনকারী প্রধানতম দুটি দেশ। ভারতের নিজস্ব চাহিদা পূরণ করে রপ্তানি করার মত সামর্থ্য নেই। এই সম্ভাবনাকে তাই কাজে লাগাতে বাংলাদেশকে দ্রæত বাস্তবসম্মত পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি ছিল। অথচ পাট শিল্প নিয়ে পূর্বাপর ভাবনা চিন্তা, গবেষণা, সার্ভে না করে এ সময় সরকার রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকল বন্ধ করে দিল। যা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। দেশের চাহিদা ও রপ্তানি মিলিয়ে এখনকারই চাহিদা পাঁচ লক্ষ মেট্রিক টন। অথচ এখন উৎপাদন ক্ষমতা সাড়ে তিন লক্ষ মেট্রিক টন। এখনকার ঘাটতির দেড় লক্ষ মেট্রিক টন। এছাড়া জরুরি ভিত্তিতে সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে ভারতের সাথে আলোচনা করে এন্টি-ডাম্পিং প্রথা প্রত্যাহার করে ভারতের বাজার ধরতে পারলে অন্তত ৪-৫ লক্ষ মেট্রিক টন পাট পণ্যের বাজার পাওয়া যাবে। আর আন্তর্জাতিক বাজারের চাহিদা ৩ লক্ষ মেট্রিক টন তো রয়েছে, যা আরো বাড়বে। সব মিলিয়ে এখনই আমাদের ৯ লক্ষ মেট্রিক টন পাটপণ্য উৎপাদনের লক্ষ নিয়ে এগুনো দরকার। যার মাধ্যমে নতুন করে দেড় লাখ মানুষের কর্মসংস্থান তৈরির সম্ভাবনা সৃষ্টি হবে।
লিখিত বক্তব্যে আরও বলা হয়, এই সুযোগ গ্রহণ করলে রাষ্ট্রীয় উদ্যোগে নতুন নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি, শিল্প ও জাতীয় অর্থনীতিতে নতুন গতি সঞ্চার করা যাবে। এজন্য প্রয়োজন হল পাট শিল্পের উৎপাদন বাড়াতে ও রপ্তানির পণ্য তৈরি করতে আগ্রাসী নীতি গ্রহণ। এই কাজে ব্যর্থ হওয়ার অর্থ হল দেশের চাহিদা পূর্ণ ও রপ্তানির সুযোগ হাতছাড়া করা। এটি হাতছাড়া হলে তা হবে দেশের পাট, পাটশিল্পের সাথে জড়িতদের কর্মহীন করা। দেশের শিল্প, অর্থনীতি ও জাতির জন্য আত্মঘাতি।
সংবাদ সম্মেলনে পাটকল বিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটি আধুনিকায়ন করে পাটকল চালুর সুপারিশ করায়, তাদের ধন্যবাদ জানান হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে পাটকল চালুর জন্য, চীনের সরকার কর্তৃক প্রস্তাবিত এমওইউ’র ভিত্তিতে পাটকল আধুনিকায়ন অথবা শ্রমিক কর্মচারী ঐক্য পরিষদ (স্কপ) প্রস্তাবিত ১২০০ কোটি টাকা ব্যয়ে রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকল আধুনিকায়ন ও চালুর আহŸান জানান হয়। সংবাদ সম্মেলনে, ২০১৮ সালে অধিগ্রহণকৃত ৬টি পাটকল ও ৭টি বস্ত্রকল আধুনিকায়ন করে চালু, রাষ্ট্রায়ত্ত খাতের পাটকল শ্রমিকদের ও অধিগ্রহণকৃত পাটকল ও সুতাকল শ্রমিকদের পাওনাদি একসাথে পরিশোধের দাবি জানান হয়।
সংবাদ সম্মেলনে দেশব্যাপী আন্দোলন অব্যাহত রাখা এবং আগামী ২৪ জানুয়ারি গণঅভ্যুত্থান দিবসে, মহান গণঅভ্যুত্থান ও পাটকল শ্রমিকদের ভ‚মিকা বিষয়ে দেশব্যাপী সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে বলে জানান হয়।

Share.