Ticker news is disabled.

মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ করে ১৫ আগস্টের কুশীলবদের প্রতিহত করতে হবে—আমির হোসেন আমু

0

“বঙ্গবন্ধু হত্যার সুবিধাভোগী কারা তা আজ সুষ্পষ্ট। সংবিধানে ধর্মনিরপেক্ষতা ও সমাজতন্ত্রসহ চার মূলনীতি সংযোজনের কারণে তাঁকে হত্যা করা হয়। দেশের মানুষ ঐক্যবদ্ধ ভাবে মুক্তিযুদ্ধে যুক্ত না হলে নয় মাসে স্বাধীন হতো না। মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বিপরীতে অনেকেই বিরোধী পক্ষে অবস্থান নিয়েছে তা চরম বেঈমানীর সামিল।”
আজ ১৩ আগস্ট ২০২২ শনিবার সকাল ১১টায় রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন সেমিনার হলে (২য় তলা) বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির উদ্যোগে অনুষ্ঠিত “বঙ্গবন্ধুর হত্যাকা-: অভ্যন্তরীণ ষড়ষন্ত্র ও মার্কিন যোগসাজশ” শীর্ষক এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের উপদেষ্টাম-লীর সদস্য ও ১৪ দলের সমন্বয়ক জননেতা আমির হোসেন আমু এ অভিমত ব্যক্ত করেন। আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক কমরেড ফজলে হোসেন বাদশা এমপি। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু এমপি, ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি শাহরিয়ার কবির, বিশিষ্ট সাংবাদিক সোহরাব হাসান। আলোচনা সভায় জননেতা কমরেড রাশেদ খান মেনন এমপি তাঁর অনুপস্থিতির কারণে লিখিত বক্তব্য পাঠ করা হয় ও সভা সঞ্চালনা করে বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির পলিটব্যুরোর সদস্য কমরেড কামরূল আহসান।
কমরেড রাশেদ খান মেনন তাঁর লিখিত বক্তব্যে বঙ্গবন্ধু হত্যা কোন ব্যক্তি হত্যা ছিল না। ছিল না কিছু ‘বিপথগামী সেনা সদস্য’র হঠকারিতা। এই হত্যার জন্য ’৭২ সাল থেকেই প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। পঁচাত্তরের পনেরই আগস্ট তার বাস্তবায়ন করা হয়েছে। বঙ্গবন্ধু হত্যার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ পিছিয়েছে, বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ পথভ্রান্ত হয়েছে, সুতরাং বঙ্গবন্ধু হত্যা সম্পর্কে অস্পষ্টতা রেখে দেশের রাজনীতি ও রাজনৈতিক অঙ্গনকে কলংকমুক্ত করা যাবে না, শংকামুক্ত করা যাবে না।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু বলেন, ‘৭৫ এর পটপরিবর্তন আমরা মানি না। ‘৭৫ এর পক্ষ বিপক্ষ আছে। আমরা ‘৭৫ এর হত্যাকা-ের বিপক্ষে। বঙ্গবন্ধু বাঙালি জাতিকে যোদ্ধায় পরিণত করেছিলেন। এক কৌশলী নেতা হিসাবে সব কিছুকে সমন্বয় করেছিলেন। বাঙালী মন থেকে দ্বিজাতির তত্ত্বের ভিত্তিতে গড়া পাকিস্তান মনস্কতা দূর করেছিলেন। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছিল ‘৭২ সাল থেকে। পাকিস্তানের পরাজয় মেনে না নেয়ার পক্ষ এবং পুনরায় পাকিস্তানের পথে নিতে ‘৭৫ এর নৃশংস হত্যাকা- সংগঠিত করা হয়। তিনি বাংলাদেশের রাজনীতি নিরাপদ করতে রাজনীতির বিষবৃক্ষ বিএনপির রাজনীতি উপড়ে ফেলার আহবান জানান।
ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি সভাপতি শাহরিয়ার কবির বলেন, বঙ্গবন্ধুর হত্যার বিচারের রায়ের পর্যালোচনায় বলা হয়েছিল নেপথ্যের খলনায়কদের চিহিৃত করতে হবে। বঙ্গবন্ধু মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় ভিত্তিতে ‘৭২ এ সংবিধান দিয়েছিলেন। জেনারেল জিয়া ক্ষমতা দখল করে সেই সংবিধান কাটাছেঁড়া করে হত্যা করেছে। পাকিস্তানের পরাজয় ওরা মেনে নেয়নি। বঙ্গবন্ধু ধর্মের রাজনীতি নিষিদ্ধ করেছিলেন। সামরিক শাসকরা সংবিধানে রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম জুড়ে দেয়। ‘৭১ এর মুক্তিযুদ্ধে আমেরিকা আমাদের বিপক্ষে ছিল আজও তারা বিপক্ষে। সে দিন তারা জামাতের পক্ষে ছিল আজও তারা জামায়াতের রাজনীতি নিষিদ্ধের বিরুদ্ধে।
বিশিষ্ট সাংবাদিক সোহরাব হাসান বলেন, শুধু মার্কিন না তাদের দোসর পাকিস্তান ও তার মিত্ররা ‘৭৫ এর ঘটনাবলীর সাথে সম্পৃক্ত। তিনি বলেন, বামপন্থী নেতা আব্দুল হক শেখ মুজিবর রহমানকে হটাতে তৎকালীন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ভুট্টোর সহায়তা চেয়ে চিঠি দিয়েছিলেন। তিনি বলেন, শুধু আওয়ামী লীগ নয়, সে সময়ের ছাত্রলীগ, যুবলীগ নেতৃবৃন্দের ভূমিকাও তদন্ত করা দরকার। তিনি বলেন, অসাম্প্রদায়িক গণতান্ত্রিক রাজনীতি কারণে গড়ে ওঠা ১৪ দল যদি আদর্শিক জোট না হয় তাহলে ‘হেফাজতে ইসলাম’ নতুন মিত্র হিসাবে আগামী জোট সঙ্গী হবে।

সভাপতির বক্তব্যে কমরেড ফজলে হোসেন বাদশা বলেন, জ¦ালানী তেলের মূল্যবৃদ্ধিতে সৃষ্ট সংকটে জনগণের পক্ষে ১৪ দলের শরীকরা কথা বলায় ক্ষমতাসীন দলের নেতারা ১৪ দলকে ‘আদর্শিক জোট’ না বলে বক্তব্য দিচ্ছেন, এটা সঠিক নয়। মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় অসাম্প্রদায়িক গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক ব্যবস্থা গড়ে তোলার জন্যই ১৪ দল গড়ে উঠেছে যা পরিপূর্ণভাবে আদর্শিক। এখানে ভিন্নতা দেখানোর কোন সুযোগ নেই। তিনি বঙ্গবন্ধুর হত্যার নেপথ্যের কারিগরদের জাতির সামনে তুলে ধরার জন্য একটি স্বাধীন নিরপেক্ষ তদন্ত কমিশন গঠনের আহবান জানান।

Share.