বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির ১০ ও ১১ অক্টোবরের দুদিন ব্যাপী পলিটব্যুরোর ভার্চুয়াল সভা দেশের চালসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্যবৃদ্ধি পরিস্থিতির পর্যালোচনা করে বলেছে, দেশের খাদ্য উৎপাদন প্রয়োজনের তুলনায় উদবৃত্ত হওয়ার পরও চালের এই মূল্যবৃদ্ধি কেবল অস্বাভাবিকই নয়, পরিকল্পিত ও উদ্দেশ্যমূলক। খাদ্যমন্ত্রণালয় মিল গেটে চালের মূল্য নির্ধারণ করে দেওয়ার পরও তা মানা হচ্ছে না। ধানের মূল্যবৃদ্ধির অজুহাতে মিলাররা চালের দাম বাড়িয়েই চলেছে। অথচ বছরের এই সময়ে কৃষকের কাছে কোন ধান নাই। যদি ধান থেকে থাকে তবে সেটা মজুতদারের কাছে রয়েছে এবং দাম বাড়ার আশায় চাল থাকার পরও তা বাজারে ছাড়া হচ্ছে না। এদিকে করোনার ফলে আয় কমে যাওয়ায় মানুষের পক্ষে অতিরিক্ত মূল্য দিয়ে চাল কেনা সম্ভব হচ্ছে না। তারা চালসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্য কেনা কমিয়ে দিতে বাধ্য হচ্ছে। ওয়ার্কার্স পার্টির প্রস্তাবে বলা হয়, অতীতে বৃটিশ, পাকিস্তান ও বাংলাদেশেও দেখা গেছে চালসহ খাদ্যদ্রব্যের অপর্যাপ্ততা নয়, এর ব্যবস্থাপনার ব্যর্থতায় মজুতদারী ও বাজার সিন্ডিকেটের কারণে মূল্যবৃদ্ধি ঘটেছে এবং মানুষ দুর্ভিক্ষের মুখে পতিত হয়েছে। এবারও সরকার কর্তৃক কার্যকর ব্যবস্থা নেয়া না হলে আমন ওঠার আগেই দেশের মানুষকে খাদ্য সংকটের মুখে পড়তে হবে। পলিটব্যুরোর প্রস্তাবে বলা হয় ওয়ার্কার্স পার্টি এই পরিস্থিতি বিবেচনা করে গত ২রা অক্টোবর সারা দেশে জেলা প্রশাসনের মাধ্যমে খাদ্যমন্ত্রী মহোদয়ের কাছে স্মারকলিপি পেশ করে। কিন্তু সরকার তা বিবেচনায় নিয়েছে বলে মনে হয় না। এদিকে চাতাল মালিকসহ বাজার সিন্ডিকেট বরং বেপরোয়া। এই অবস্থায় পার্টি পুনরায় খাদ্যমূল্যের উর্ধগতির ব্যাপারে দেশবাসীসহ সংশ্লিষ্ট সকলের দৃষ্টি আকর্ষণ করছে এবং ভবিষ্যতে সে ধরণের পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য পার্টির সকল ইউনিটের প্রস্তুত থাকার আহ্বান জানিয়েছে।
পার্টির সভাপতি কমরেড রাশেদ খান মেননের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত পলিটব্যুরোর সভায় দেশের সার্বিক পরিস্থিতি সম্পর্কে পর্যালোচনা রিপোর্ট উত্থাপন করেন পার্টির সাধারণ সম্পাদক কমরেড ফজলে হোসেন বাদশা। আলোচনায় অংশ নেন পলিটব্যুরোর সদস্য আনিসুর রহমান মল্লিক ড. সুশান্ত দাস, মাহমুদুল হাসান মানিক, নূর আহমেদ বকুল, কামরূল আহসান, অধ্যক্ষ নজরুল ইসলাম হক্কানী, এনামুল হক এমরান ও অধ্যাপক নজরুল হক নীলু প্রমুখ।