• ১৮ এপ্রিল ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
  • ৫ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ডিসেম্বর ২০২০ এর মধ্যেই তিস্তানদী মহাপরিকল্পনার কাজ শুরু করার আহ্বান-হক্কানী

0

তিস্তা বাঁচাও নদী বাঁচাও সংগ্রাম পরিষদের আহবায়ক নজরুল ইসলাম হক্কানী চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যেই তিস্তানদী মহাপরিকল্পনার কাজ শুরু করার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি তিস্তানদী মহাপরিকল্পনা প্রকল্প গ্রহন করায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রী’র প্রতি কৃতজ্ঞতা ও অভিনন্দন জানিয়ে বলেন,রংপুর বিভাগের মানুষ দীর্ঘদিন  বৈষম্যের যাতাকলে হাঁসফাঁস করছিল।উন্নয়ন বাজেটে আমাদের বরাদ্দ ছিল খুবই কম।সারা দেশে দারিদ্র্যের হার কমলেও রংপুর বিভাগে গড় দারিদ্র্যের হার ৪৬ শতাংশ।

নদীভাঙনে তিস্তা পাড়ের দুই তীরের মানুষ হয়েছেন জমিহারা-ঘরহারা উদ্বাস্তু। রংপুর বিভাগে অতীতে কোন ম্যাগাপ্রজেক্ট গ্রহন করা হয়নি। সব হয়েছে দক্ষিণাঞ্চলে। এবারেই প্রথম
তিস্তা নদীকে ঘিরে প্রায় আট হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে ” তিস্তা প্রকল্প” হাতে নে’য়া হয়েছে। এটা বিদেশে’র প্রকল্প না।চীন এই প্রকল্পে পদ্মাসেতুসহ দক্ষিণাঞ্চলে চলমান ম্যাগাপ্রজেক্ট -এর মতো তিস্তা প্রকল্পে বিনিয়োগ করতে আগ্রহ প্রকাশ করছে।এই প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে তিস্তানদী ড্রেজিং হবে।তিস্তার দুইতীর সংস্কার ও বাঁধানো হবে।হবে লাখলাখ হেক্টর ভূমি পুনরুদ্ধার। প্রকল্পের আওতায় তিস্তা নদীর দুই পাড়ে ২২০ কিলোমিটার গাইড বাঁধ নির্মাণ করে
নদী ভাঙণ, উপর্যুপরি বন্য ও খরার হাত থেকে
তিস্তা পাড়ের চরাঞ্চলের কৃষি, কৃষককে বক্ষা করা হবে।পুনরুদ্ধারকৃত খাসজমি ভূমিহীনদের পুনর্বাসনসহ শিল্পায়নের কাজে লাগানো হবে।
গড়ে উঠবে আধুনিক কৃষি খামার,ফুডপ্রসেসিং ইন্ডাস্ট্রি, পোষাক শিল্প ও অর্থনৈতিক জোন।পুনর্বাসন করা হবে তিস্তা পাড়ের লাখ লাখ ভূমিহীন, নদীভাঙা পরিবারকে।তিস্তা পাড় হয়ে উঠবে সুইজারল্যান্ড ও সিঙ্গাপুরের মতো সুন্দর নগরি।দেড় শ’ মেগাওয়াট সৌরবিদ্যিত্ কেন্দ্র স্হাপন করা হবে এই প্রজেক্ট এরিয়ায়।নৌপথ চালু করা হবে।তিস্তা আবার জেগে উঠবে।তিস্তা হয়ে উঠবে পর্যটন শিল্পের অগ্রপথিক।সৃষ্টি হবে লাখ লাখ মানুষের কর্মসংস্হান।হক্কানী বলেন, তিস্তা প্রকল্প নিয়ে নানা অপপ্রচার ছড়ানো হচ্ছে।বলা হচ্ছে,চীনের অর্থায়নে এই প্রজেক্ট বাস্তবায়ন হলে বাংলাদেশ- ভারত সম্পর্কের অবনতি ঘটবে।এটা কোনভাবেই ঠিক না।এটা আমাদের নিজস্বার্থ রক্ষার নিজস্ব প্রজেক্ট।গতকাল সোমবার রংপুর প্রেসক্লাব মিলনায়তনে
তিস্তা বাঁচাও নদী বাঁচাও সংগ্রাম পরিষদের রংপুর বিভাগীয় প্রতিনিধি সভায় সভাপতির বক্তৃতায় তিনি একথা বলেন।বৈরি আবহাওয়া, গুড়িগুড়ি বৃষ্টি উপেক্ষা করে রংপুর বিভাগের ৫ টি জেলার তিস্তার দুই পাড়ের বিভিন্ন উপজেলার ২০০ প্রতিনিধি “তিস্তা মহাপরিকল্পনা
বাস্তবায়নের”- স্বপ্ন বুকে ধারণ করে সভায় উপস্হিত হয়েছিলেন।সকাল ১১ টায় অনুষ্ঠিত প্রথম অধিবেশনে বক্তব্য রাখেন বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ শাহাদাত হোসেন,সাখাওয়াত রাঙা,অশোক সরকার, আব্দুল কুদ্দুস, রংপুর প্রেস ক্লাব সভাপতি রশিদ বাবু, সাধারণ সম্পাদক রফিক সরকার ও রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক, নদী গবেষক ড.তুহিন ওয়াদুদ। চার ঘন্টাব্যাপী অনুষ্ঠিত দ্বিতীয় অধিবেশনে তিস্তা মহাপরিকল্পনা গ্রহণ করায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রী- কে অভিনন্দন জানিয়ে এই প্রকল্প দ্রুত বাস্তবায়নের কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়।কর্মসূচিতে রয়েছে-১) সেপ্টেম্বর- অক্টোবর
দুই মাস ব্যাপী তিস্তার  দুই পাড়ের গ্রাম- ইউনিয়ন- উপজেলা ও জেলা শহরে গণসংযোগ,
মতবিনিময় সভা,লিফলেট বিতরণ,ডিজিটাল ব্যানার সাটানো২) অক্টোবরে বিভাগীয় নগরী রংপুরে সাংবাদিক সম্মেলন এবং গোলটেবিল বৈঠক অনষ্ঠান ৩) ১ নভেম্বর বাংলাদেশ অংশের
১১৫ কিলোমিটার তিস্তার দুই পাড়ে মানববন্ধন।
দ্বিতীয় অধিবেশনে নজরুল ইসলাম হক্কানীকে সভাপতি,  শাফিয়ার রহমানকে সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত করে ১০৯ সদস্য বিশিষ্ট সাধারণ পরিষদ এবং ২১ সদস্য বিশিষ্ট তিস্তা বাঁচাও নদী বাঁচাও সংগ্রাম কমিটি পুনর্গঠন করা হয়।অনুষ্ঠান সঞ্চালন করেন শাফিয়ার রহমান।
Share.